চলমান ভর্তি পরীক্ষার সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভ্রাম্যমাণ ফুচকা-চটপটির দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বটতলা এলাকায় কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিভিন্ন হারে চাঁদা দাবি করেন তারা।
এবারের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে যেকোনো ধরনের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসানোর অনুমতি দেয়া হবে না বলে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন। ফুচকার দোকান বসানোর ফলে প্রশাসনের ঝামেলা তারা দেখবে শর্তে চা-পানির টাকা দাবি করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
পরে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ও ভুক্তভোগী দোকানদার সূত্রে জানা যায়, রোববার ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী এসব দোকানদারদের কাছে যান। সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ভ্রাম্যমাণ দোকান চালানো করা বন্ধ আছে বলে জানান। তবে তাদের প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ টাকা করে টাকা দিলে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারবেন এবং কোনো ধরনের সমস্যা হলে তারা (নেতারা) দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে দোকানদাররা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, অভিযুক্তরা পরে যেকোনো সময় টাকা নিতে আসবেন বলে জানান।
বিষয়টি ছাত্রদলের অভ্যন্তরে জানাজানি হলে কয়েকজন নেতাকর্মী এসব দোকানদারদের কাছে যান এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছবি দেখান। এর মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সদস্য গোলাম রাব্বানী অর্নবকে শনাক্ত করেন দোকানদাররা। অর্নবের সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন বলে জানান তারা, তবে বাকিদের শনাক্ত করতে পারেননি ওই দোকানিরা।
চাঁদা দাবির বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ একটি ফুচকার দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী তার দোকানে যান। একপাশে ডেকে নিয়ে অর্নব (ছবি দেখে শনাক্ত) তার কাছে দৈনিক এক হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় আরও কয়েকজন দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তিনি জানান।
আরেক দোকানদার বলেন, আমার দোকানে কয়েকজন এসে চা-পানি খাওয়ার জন্য টাকা দাবি করেন। তারা বলেন ব্যবসা করছেন আমাদের কিছু টাকা-পয়সা দেন চা-পানি খাওয়ার জন্য। আমি তখন বলি টাকা পয়সা এখন নেই। তারা পরে যেকোনো সময় টাকা নিতে আসবেন বলে জানান।
অর্নব বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে থাকেন। চাঁদা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। এখন যদি কেউ আমার নাম করে এমন কাজ করে থাকে তাহলে কি বলব। আমি এমন কোনোকিছু করিনি। সবকিছু তো আপনারা জানেন একজনের নাম বলে অন্যজন এমন কাজ করে।
আপনার ছবি দেখালে দোকানদাররা আপনাকে শনাক্ত করেছে জানালে তিনি বলেন, যদি তারা বলে আমার কি করার আছে। আমি ছিলাম না এসব মিথ্যা। তবে জাবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ (অনীক) বলেছেন, বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখব। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।