Thursday, March 13, 2025

ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না, সরকারের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ

আরও পড়ুন

গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকে কল্পনাপ্রসূত বলে দাবি করেছে দলটি। একইসঙ্গে মামলাটিকে অসাংবিধানিক ও বেআইনি উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন করেছিলেন জানিয়ে পোস্টে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতির অঙ্গীকার পূরণে এই আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল। এই বিচার সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ বলেছে, সেই বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্যে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে গণহত্যার মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে। আইনের শাসনের সকল নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

আরও পড়ুনঃ  তিনবার ফেল করে ড্রপ আউট ছাত্রদল নেতা : ছাত্রত্ব ফেরাতে লবিং

আওয়ামী লীগের পোস্টে বলা হয়, আওয়ামী লীগ অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকারের এই অসাংবিধানিক ও বেআইনি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নিন্দা ও ঘৃণা জানাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এই ঘৃণ্য প্রক্রিয়া বাতিল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।

এতে আরো বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকারের উদ্যোগে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, সেই ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবীকে প্রহসনমূলক চিফ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়। এটি জাতির সঙ্গে এক জঘন্য মশকরা।

গণহত্যার ব্যাপারে জাতিসংঘের কনভেনশনের সংজ্ঞা তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, এই কনভেনশন অনুযায়ী গণহত্যা হলো হত্যাকাণ্ডসহ এমন ক্ষতিকারক কাজ করা, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে, কোনো জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় কিংবা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করা।

আরও পড়ুনঃ  ১৯ বছর পর আজ প্রকাশ্যে জামায়াতের রুকন সম্মেলন

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালানো হয়েছিল দাবি করে আওয়ামী লীগ বলেছে, দেশব্যাপী পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে হত্যাসহ যে অকথ্য নির্যাতন চালানো হচ্ছে, সেটিই গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে। গণহত্যা কনভেনশনে গণহত্যার সংজ্ঞায় যে শর্তগুলো আছে, এই হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাস সেসব শর্ত পূরণ করে।

পোস্টে বলা হয়, আওয়ামী লীগ মনে করে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক ও অবৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে যে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এটি নিন্দিত হবে।

আরও পড়ুনঃ  ৭ বছর আগে বর্ধিত সভায় খালেদা জিয়ার ভবিষ্যতবাণী সত্যি হবার পথে

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ব সম্প্রদায় এই ষড়যন্ত্রমূলক উদ্যোগকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের মনে রাখা উচিত, স্বাধীন বাংলাদেশে এযাবৎ কয়েক দফা অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক শক্তি আমাদের ওপর চেপে বসেছিল। জনগণ এই অগণতান্ত্রিক শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের আদালতের মতো আমাদের সুপ্রিম কোর্টও এই ধরনের অসাংবিধানিক শক্তিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭(খ) অনুযায়ী সংবিধান লঙ্ঘন করে কোনো অসাংবিধানিক শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করলে তার শাস্তি দেশের প্রচলিত আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড। আর বিলম্ব না করে অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরে যান। অন্যথায়, জনগণের পবিত্র ইচ্ছার প্রতিফলন এই সংবিধান এবং ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ